বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১২:৫৪ অপরাহ্ন

বিশ্বে খেলার মাঠ থেকে রাজনীতিতে…

বিশ্বে খেলার মাঠ থেকে রাজনীতিতে…

স্বদেশ ডেস্ক: খেলার মাঠ ও রাজনৈতিক মাঠ একেবারেই ভিন্ন দুটি অঙ্গন। তবে দুটোই কিন্তু মাঠ। একটা খেলার, আরেকটি রাজনীতির। দুটো মাঠেই কাঁপিয়ে বেড়ানো যায়, বিতর্কিত হওয়া যায়। কিন্তু যিনি খেলার মাঠ কাঁপিয়েছেন, তিনি রাজনীতির মাঠ কতটা কাঁপাতে পারেন সেই প্রশ্ন জন্ম-জন্মান্তরের। একসঙ্গে দুটো করা কি আদৌ সম্ভব কিনা সেই প্রশ্নও বেশ পুরনো। রাজনীতি এমনই এক বিষয় যেখানে আসলে সবই সম্ভব, বিশেষ করে বাংলাদেশে অসম্ভব বলে কিছুই নেই। সবার কাছেই সে এক অন্যরকম আগ্রহের জায়গা হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। দেশের হয়ে ক্রীড়াজগতে অনন্য সম্মান এনে দেয়া অনেক খেলোয়াড় তাই নিজেদের খেলোয়াড়ি জীবন শেষে ঘাঁটি গেড়েছেন রাজনীতির মাঠে। সংখ্যাটা যে খুব বেশি সেটাও বলা যাবে না আবার সবাই যে সফল হন সেটাও ঠিক না। তবে ব্যর্থ হয়েছেন সেটা ঠিক বলা যায় না। ইতিহাস বলছে, রাজনীতির মাঠে ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণ একেবারেই কম নয়। দুজন আবার দেশের সর্বোচ্চ পদ প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন! এই তো কয়েক মাস আগে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক ইমরান খান তালিকার নিজের নাম উঠিয়েছেন। খেলতে খেলতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার ইতিহাসও আছে শ্রীলঙ্কায়। আর খেলার মাঠে নিয়মিত থাকা অবস্থায় সেই গল্পটা তৈরি করেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এর আগে বাংলাদেশে নাঈমুর রহমান দুর্জয়ও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ক্রিকেটের পিচ থেকে রাজনীতির মাঠ নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠার তালিকায় আরও রয়েছেন শ্রীলঙ্কার অর্জুনা রানাতুঙ্গা, সনৎ জয়সুরিয়া, হাসান তিলকারতেœ, ভারতের মনসুর আলী খান পতৌদি, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, নভজোৎ সিং সিধু, বিনোদ কাম্বলি, মনোজ প্রভাকর, কীর্তি আজাদ, পাকিস্তানের সরফরাজ নাওয়াজ, আমির সোহেল প্রমুখ। ভারতের রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে নাম লিখিয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকারও। রাজনীতির মাঠে ক্রীড়াঙ্গনের তারকাদের নিয়ে সাপ্তাহিকের এ আয়োজন।
জর্জ উইয়াহ, লাইবেরিয়া: আফ্রিকার খেলোয়াড়দের মধ্যে একমাত্র হিসেবে ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন জর্জ উইয়াহ। লাইবেরিয়াকে তিনি এর বাইরে অনেকদিক দিয়েই আলোকিত করেছেন। ক্রীড়াজগৎ থেকে রাজনীতিতে আসার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত হলেন তিনি। এই মুহূর্তে তিনি লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট। বস্তি থেকে উঠে আসা এই লোক নিজের নাম লিখিয়েছিলেন ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। লাইবেরিয়ার মতো জায়গায় জন্ম নিয়েও খেলেছিলেন ইউরোপিয়ান ফুটবলে। নিজের সময়ে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজির) অন্যতম সেরা ফুটবলার ছিলেন তিনি। খেলেছেন এসি মিলান আর চেলসির মতো ক্লাবেও। তিনি ব্যালন ডি’অরও জিতেছেন। টানা ১৮ বছর পেশাদার ফুটবল খেলার পর ২০০৩ সালে সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসর নেন এই আফ্রিকান। এরপর ২০০৫ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন উইয়াহ। নিজে তৈরি করেন ‘কংগ্রেস ফর ডেমক্রেটিক চেঞ্জেস’ নামের দল। কিন্তু উইয়াহর দুর্ভাগ্য। সে বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যোগ দিতে গিয়ে বেশ হ্যাপা পোহাতে হয়েছে তাকে। শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে প্রতিপক্ষ দল। নির্বাচনে অংশগ্রহণই ভেস্তে যাচ্ছিল তার। যদিও হেরে গিয়েছিলেন তিনি। যে পড়াশোনার কারণে খোঁচা সহ্য করছিলেন, সেটার পিছনেই দৌড়ালেন এবার। প্রথমে ক্রীড়া ব্যবস্থাপনার উপর স্নাতক করলেন লন্ডনের পাকউড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর মায়ামির দেভরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ। তারপর আবার রাজনীতি। ২০১৪ সালে জিতলেন সিনেট নির্বাচনে। হারিয়ে দিলেন প্রেসিডেন্টের ছেলে রবার্ট শিরলিফকে। তারপর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হলেন ২০১৭ সালে। ব্যাস, তাকে আর ঠেকায় কে। ১২ বছর দায়িত্বে থাকা তৎকালীন প্রেসিডেন্টকে হারিয়ে রাজনীতিতেও ‘গোল’ করলেন এই ফুটবলার। পুরস্কার পেলেন দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের। এখন তিনি দেশটির মানুষের মনের রাজাও।
মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, ভারত: ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সফল অধিনায়ক হিসেবে নাম থাকবে তার। কিন্তু তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার অনেক বিতর্কের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছিল। ১৬ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ৩৩৪ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে মোট ৯৩৭৮ রান তুলেছিলেন আজহার। তার সময়ে এটা ছিল বিশ্বরেকর্ড। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার ফিক্সিং কেলেঙ্কারিই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) আজহারউদ্দিনকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে। ৯৯ টেস্ট খেলে থেমে যেতে হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে শততম টেস্ট খেলার চেষ্টা করলেও তাতে কোনো কাজই হয়নি। এটি তার জীবনের অন্যতম হতাশা হয়েই থাকবে। এরপর রাজনীতিতে আসেন তিনি। ২০০৯ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস পার্টির হয়ে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে অন্ধ্র প্রদেশের হাইকোর্ট তার উপরে থাকা জীবনের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেন। কারণ সাবেক এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কোনো শক্ত প্রমাণ ততদিনেও পাওয়া যায়নি। তবে টেস্ট ক্যারিয়ারে একশ টেস্ট না খেলার হতাশা তাকে অনেকদিন পোড়াবে। রাজনীতি তার এই ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারেনি।
গ্যারি কাসপারোভ, রাশিয়া: দাবায় তিনি বিশ্বের সেরাদের একজন, সেটা সংক্ষিপ্ত তালিকা করলেও নামটা এসে যাবে অটোমেটিকভাবে। রাশিয়ান গ্যারি কাসপারোভকে এখনও সর্বকালের সেরা দাবাড়ু বলা হয়। ২০০৫ সালে দাবা থেকে অবসর নেয়ার পর জীবনের প্রায় পুরোটা সময় তিনি খরচ করেছেন রাজনীতি ও লেখালিখি করে। তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের প্রতিপক্ষ পার্টিতে অংশ নেন। তিনি পুতিনের এডমিনিস্ট্রেশন পলিসি নিয়ে তুমুল সমালোচনা করেন। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন কাসপারোভ। কিন্তু নির্বাচনের দাবার বোর্ডে হেরে যান তিনি। রাশিয়াতে পুতিন অনন্য সাধারণ এক ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দেশটিতে তার বিরুদ্ধে এমন সাধ্য খুব কম মানুষেরই রয়েছে। সে কারণে নিজ দেশে আর বেশিদিন থাকতেও পারেননি কাসপারোভ। এই মুহূর্তে তিনি ক্রোয়েশিয়ার নাগরিক।
সনাৎ জয়সুরিয়া, শ্রীলঙ্কা: ড্যাশিং ওপেনার হিসেবে ক্রিকেটে নতুন দিনের সূচনা করেছিলেন তিনি। ক্রীড়া জগতে শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি সনাৎ জয়সুরিয়া হলেন একমাত্র ক্রিকেটার যিনি কি না জাতীয় দলে থাকার সময়েই রাজনীতিতে বিচরণ করেছেন। এমনকি জাতীয় দলে থাকার সময়েই সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, পাস করেছেন। ২০১০ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জয়সুরিয়া। জাতীয় দল থেকে অবসরে যান ২০১১ সালে। রাজনীতি করার পথে একবার মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন জয়সুরিয়া। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে আর তাকে নির্বাচনে পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের মাশরাফি বিন মর্তুজার আগে একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে খেলোয়াড় থাকার সময় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
অর্জুনা রানাতুঙ্গা, শ্রীলঙ্কা: সনাৎ জয়সুরিয়ার অধিনায়ক ছিলেন তিনি। নানা কারণে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের পুরোটা সময়ই থেকেছেন পাদপ্রদীপের আলোয়। শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা এই মুহূর্তে দেশটির ডাকসাইটে রাজনীতিবিদ। তার শুরুটা হয়েছিল শ্রীলঙ্কান ফ্রিডম পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে। ২০০১ সংসদ নির্বাচনে তিনি কলম্বোর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে শিল্প, পর্যটন ও বিনিয়োগ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি পান। এরপর ২০১০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান সারাথ ফনসেবা দলে যোগ দেন। ২০১০ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফোনসেকা মাহিন্দা রাজাপাকশের বিপক্ষে নির্বাচনে হেরে যান। তারপর মিলিটারিদের কোর্ট মার্শালের খড়গে পড়তে হয় তাকে। তবে কারণটা ছিল অজানা। পরবর্তীতে ২০১২ সালে ফনসেকার দল থেকে পদত্যাগ করেন। তবে যোগাযোগটা বন্ধ করেননি। ২০১৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাইথ্রিপালা সিরিসেনাকে সমর্থন দেন। সিরিসেনা জয় পেলে হাইওয়ে, বন্দর ও জাহাজ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান রানাতুঙ্গা। অর্থাৎ, এই মুহূর্তে তিনি মন্ত্রী হিসেবে কর্মরত আছেন।
নাইমুর রহমান দুর্জয়, বাংলাদেশ: রাজনীতিক পরিবারে জন্ম নেয়ার কারণে এই অঙ্গনে পা রাখাটা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় জাতীয় দল থেকে অবসর নেয়ার পর রাজনীতিতে ক্যারিয়ার গড়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনীতিতে জড়ান তিনি। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশের সাবেক এ ক্রিকেটার। জাতীয় দলের হয়ে তিনি ৮ টেস্ট ও ২৯টি ওয়ানডে খেলেছেন।
ইমরান খান, পাকিস্তান: তাবৎ দুনিয়ার ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল নাম ইমরান খান। যা অর্জুনা রানাতুঙ্গা, সনাৎ জয়সুরিয়া, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, নাইমুর রহমান দুর্জয়রা করতে পারেনি সেটাই তিনি করে দেখিয়েছেন। ক্রীড়াবিদদের রাজনৈতিক সফলতার সর্বশেষ সংযোজন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন তিনি। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সব মিলিয়ে ১১৭টির মতো আসনে জয়লাভ করে। ইমরান খানের অধীনেই বিশ্বকাপ জেতে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন ফাস্ট বোলার ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। তার গতি আর সুইং প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানদের কাছে সাক্ষাৎ ত্রাস ছিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার ৪ বছর পর রাজনীতিতে নামেন ইমরান খান। ১৯৯৬ সালে নিজের পার্টি পিটিআই তৈরি করেন। ২২ বছর রাজনীতির মাঠ কাঁপিয়ে এবার ২০১৮ সালে এসে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯২ সালে যেভাবে প্রতিকূল অবস্থা থেকে পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন রাজনীতির মাঠে সেভাবে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে সফল হয়েছেন।
মাশরাফি বিন মর্তুজা, বাংলাদেশ: সনাৎ জয়সুরিয়ার পর মাঠের ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার সময়ই দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। নড়াইল-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েই ঢাকায় চলে এসেছেন। এখন খেলছেন বিপিএলে। ক্রিকেট ইতিহাসে মাশরাফিই কি একমাত্র ক্রিকেটার যিনি খেলাকে পুরোপুরি বিদায় না জানিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন? ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত নিজ এলাকায় জনসংযোগ করলেন। ৩০ তারিখের নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক ভোটে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য হলেন। সংসদ সদস্য হয়েই বিপিএলের জন্য ঢাকায় চলে এলেন, প্রথমদিনই নেমে পড়লেন মাঠে। ৩০ ডিসেম্বরের পর থেকে এভাবেই চলছে দেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার জীবন। কখনো তিনি ক্রিকেটার, কখনো তিনি জাতীয় সংসদে নিজ এলাকার নির্বাচিত প্রতিনিধি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877